২০২৪ সালে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয়?
যাকাত কাদের উপর ফরজ
যাকাত সবার উপরে ফরজ নয় শুধুমাত্র ধনীদের ওপর ফরজ করা হয়েছে। যদি কারো নেসাব পরিমান সম্পদ থাকে তাহলে অবশ্যই যাকাত প্রদান করতে হবে। যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত সাতটি শর্তগুলো বিবরণ নিচে দেওয়া হল।
মুসলিম হওয়াঃ যাকাত ফরজ হওয়ার পূর্ব শর্ত হলো তার মুসলিম হওয়া এবং নিসব পরিমাণ সম্পদ থাকলে। আর অমুসলিমদের ওপর যাকাত ফরজ নয়। যদি কোন ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করে থাকে তাহলে তাকে অতীত জীবনে যাকাত দিতে হবে না। তবে সেদিন থেকে এসে মুসলিম হয়েছে সেদিন থেকে হিসেব করে যাকাত দিতে হবে।
নেছাবের মালিক হওয়াঃ যাকাত কাদের উপর ফরজ ,যাকাত কমপক্ষে সাড়ে সাত(৭.৫) তোলা স্বর্ণ অথবা রুপা কমপক্ষে সাড়ে ৫২ তোলা অথবা ওই মূল্যের অর্থ সম্পদ থাকে তবে তাকে যাকাত প্রদান করতে হবে।
নেছাবের পরিমান সম্পদ অতিরিক্ত হওয়াঃ একজন নেছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ার পর তার যদি জীবন যাপনে প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন ২২ গৃহ জমি গাড়ি বাড়ি পিসি সরঞ্জাম ইত্যাদির ওপর যাকাত ফরজ নয়।
ঋণগ্রস্থ না হওয়াঃ কোন ব্যক্তি যদি ঋণগ্রস্ত নিশাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তার ওপর যাকাত ফরজ নয়। তবে ঋণ পরিশোধ করার পর যদি নেছাব পরিমাণ সম্পদ কারো থাকে তাহলে তাকে যাকাত দিতে হবে।
সম্পদ বা অর্থ এক বছর স্থায়ী থাকাঃ নিশাব পরিমাণ সম্পদ যদি কারো হাতে এক বছর স্থায়ী থাকে, তাহলে তার ওপর যাকাত ফরজ নয়। এ বিষয়ে একটি হাদিস রয়েছে, ওই সম্পদের যাকাত নিয়ে যার পূর্ণ এক বছর মালিকানায় না থাকে , ইবনে মাজাহ।
জ্ঞান সম্পন্ন হওয়াঃ জ্ঞান সম্পূর্ণ হওয়া ওর বুদ্ধিবৃত্তির বুদ্ধিহীন তথা পাগলের উপর যাকাত ফরজ নয়। যাকাত কাদের উপর ফরজ যাকাত ফরজ হওয়ার পূর্ব শর্ত হল জ্ঞান সম্পূর্ণ হওয়া।
বালেগ হওয়াঃ যদি কোন শিশু নাবালকে থাকা অবস্থায় নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তার ওপর যাকাত ফরজ নয়।যাকাত কাদের উপর ফরজ কেবলমাত্র পাপতো বয়স্ক বালেগন্যের ওপর যাকাত ফরজ করা হয়েছে।
কোন সম্পদের উপর যাকাত দিতে হয় না
ব্যবসায়িক পণ্য ছাড়া ঘরে যেসব পরিবেশপত্র কাপড়-চোপড় থালা-বাসন হাড়ি পাতিল ফ্রিজ আলমারি শোকেস পড়ার টেবিল ইত্যাদি থাকলে তার উপর যাকাত আসে না।
থাকার জন্য ভাড়ার উদ্দেশ্যে যে ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হয় বা ক্ষয় করা হয় কিংবা অনুরূপ উদ্দেশ্যে যে জমি ক্রয় করা হয় সে ঘরবাড়ি ও জমির মূল্যের উপর যাকাত আসে না। তবে ব্যবসা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কয়েকটি তো বাড়ি ও জমির মূল্যের উপর যাকাত আছে।
এরপর কারখানা থাকলে এবং উক্ত কারখানার কোন উৎপাদিত পণ্য হলে সে উৎপাদন কাজে যে মেশিন যন্ত্রপাতি ও আইবাস পত্র ব্যবহৃত হয়। মিল ফ্যাক্টরিতে যে গাড়ি ও যানবাহন ব্যবহার হয় তার মূল্যের ওপর জাগাত আছে না বরং যাকাত আছে উৎপাদিত মালামাল ও ক্রয়িত কাঁচামালের উপর।
যেসব জিনিসের জায়গাটা আসে না তার মধ্যে রিকশা বেবি ট্যাক্সি বাস টাক লঞ্চ স্টিমার ইত্যাদি যা ভাড়াই খাটানো হয়। অথবা যা দিয়ে উপার্জন করা হয় তার মূল্যের উপর যাকাত আসে না। অবশ্য এসব যানবাহনে যদি কেউ ব্যবসা উদ্দেশ্যে ক্রয় করে থাকে তাহলে তার মূল্যের উপর যাকাত আসবে।
কোন পেশাজীবীরা তাদের পেশার কাজ চালানোর জন্য যেসব যন্ত্রপাতি ও জিনিসপত্র ব্যবহার করে থাকে তার মূল্যের ওপর যাকাত আসে না। যেমন কৃষকের ডাক্তার ইলেকট্রিশিয়ানদের ড্রিল মেশিন ইত্যাদি
যদি কারো নিকট ব্যবহারে উদ্দেশ্যে হিরা মনি মুক্তা ডায়মন্ড ইত্যাদি অলংকার থাকে। তাহলে তার মূল্যের উপর যাকাত আসে না তবে এরূপ নিয়ম নিয়ে হলো যে এটা একটা সঞ্চয় প্রয়োজন মুহূর্তে বিক্রয় করে নগদ অর্থ অর্জন করা যাবে এর ফলে তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে।
সর্বশেষ কথাঃ কোন সম্পদের যাকাত ফরজ হয়
যাকাত কাদের উপর ফরজ সর্বোপরি তিন প্রকারের সম্পদে যাকাত ফরজ হয় যেমন মালেক নকদঃ সোনা রুপা টাকা পয়সা এক বছর কারো মালিকানাধীন থাকলে তাদের ওপর যাকাত ফরজ হবে। মালের তিজারতঃ কোন ব্যবসার মাল অর্থাৎ যে মালের ব্যবসা করা হয় তা যদি নিসাব পরিমাণ হয় এবং এক বছর কারো মালিকানাধীন থাকলে তার ওপর যাকাত ফরজ হয়।
সায়েমাঃ যে কোন গৃহপালিত পশু অর্থাৎ গরম হয়ে ছাগল ভেড়া ঠোঁট দুম্বা মেশ ইত্যাদি যদি চরম ভূমিতে ছয় মাসের অধিককাল বিচরণ করে। অর্থাৎ ফ্রি খাওয়া দাওয়া করলে তা যদি নিসাব পরিমাণ হয় তবে তার ওপর যাকাত ফরজ হবে।