শুভ ১লা বৈশাখ।পহেলা বৈশাখের গুরুত্ব-easykhobor
শুভ ১লা বৈশাখ-পহেলা বৈশাখ, যা বাংলা নববর্ষ বা নোবো বর্ষ নামেও পরিচিত, বাংলা সৌর ক্যালেন্ডারের বৈশাখ মাসের প্রথম দিনটিকে চিহ্নিত করে। এটি বাঙালি সম্প্রদায়ের শুভ ১লা বৈশাখ জন্য সবচেয়ে পহেলা বৈশাখের গুরুত্ব উৎসব গুলির মধ্যে একটি এবং পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশে অনেক আড়ম্বরের সাথে উদযাপিত হয় পহেলা বৈশাখের। বাংলাদেশেও এটি একটি জাতীয় ছুটির দিন।
সূচিপত্রঃ পহেলা বৈশাখ
- শুভ ১লা বৈশাখ
- পহেলা বৈশাখের গুরুত্ব
- পহেলা বৈশাখের ইতিহাস
- পহেলা বৈশাখ ও বাঙালির সংস্কৃতি
এই দিনে লোকেরা নতুন পোশাক পরে, মন্দিরে যায়, সুস্বাদু প্রস্তুতি খায় এবং তাদের প্রিয়জনের সাথে সময় কাটায়। শুভ ১লা বৈশাখ বাঙালিরা এই দিনে একে অপরকে শুভ নববর্ষ বলে অভিবাদন জানায়, যার অনুবাদ 'শুভ নববর্ষ'। এই আনন্দের উপলক্ষ উদযাপনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা বাংলা জুড়ে বেশ কয়েকটি মেলা প্রাবন এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় শুভ ১লা বৈশাখ তারিখে।
শুভ ১লা বৈশাখ।পহেলা বৈশাখের গুরুত্ব
মজার ব্যাপার হল,পহেলা বৈশাখ অন্যান্য আঞ্চলিক উৎসবের সাথে মিলে যায় যেমন পাঞ্জাবের বৈশাখী, কেরালায় বিষু, তামিলনাড়ুর পুথান্ডু এবং আসামের বিহু। বাংলা ক্যালেন্ডার শুরু হয় বৈশাখ বা বৈশাখ দিয়ে। ফসল কাটার মৌসুমের সাথে তাল মিলিয়ে চলে পহেলা বৈশাখের গুরুত্ব ও ইতিহাস।
বাংলা নববর্ষের নাম পহেলা বৈশাখ বা শুভ ১লা বৈশাখ। ১লা বৈশাখ পঞ্চাঙ্গের মতে, প্রাচীন বাংলার রাজা শোশাংকোকে বাংলা যুগ শুরু করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে বাংলা যুগের সূচনা বিন্দু অনুমান করা হয়।
আরো দেখুনঃ বাংলা নববর্ষের ছবি
পহেলা বৈশাখের গুরুত্ব।শুভ ১লা বৈশাখ
পহেলা বৈশাখের শুভ উপলক্ষ্যে লোকেরা তাদের ভাল ফসলের আশীর্বাদ করার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে। এটি বাণিজ্যের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন হিসেবে চিহ্নিত কারণ ব্যবসায়ীরা নতুন অ্যাকাউন্টিং বছরের সূচনাকে হাল খাতা নামক নতুন হিসাব বই খোলার মাধ্যমে পালন করে।
নিজস্ব ভাষার পাশাপাশি সংস্কৃতি আর জীবনাচরণ মিলে পহেলা বৈশাখ তাই ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। এই দিনেই মানুষ সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে মেতে ওঠে নতুন বছরকে বরণের উৎসবে। নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে সামনে রেখে পাহাড়ে বা সমতলে নানা আয়োজনে পালন হয় পহেলা বৈশাখের গুরুত্ব বাংলার নতুন বর্ষ ১৪২৯-৩০ সন।
পহেলা বৈশাখের ইতিহাস।শুভ ১লা বৈশাখ
মোঘল সম্রাট আকবর পহেলা বৈশাখ থেকে অর্থবছর গণনার প্রথা প্রবর্তন করেছিলেন মূলত, রাজস্ব আহরণ তথা অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে। পূর্বে চন্দ্রমাসের ভিত্তিতে প্রচলিত হিজরি সন এবং সৌরবর্ষ গণনার পদ্ধতি প্রক্রিয়ার মধ্যে সমন্বয় ও সাযুজ্য সাধনের তাৎপর্য ও যৌক্তিকতাকে বিচার-বিশ্লেষণের ভার তিনি তার নবরত্ন সভার সবচেয়ে বিজ্ঞ ও বিচক্ষণ সদস্য মশহুর
ইতিহাস আবুল ফজল (১৫৫১ - ১৬০২) এবং অর্থ ও রাজস্ব বিষয়ক সদস্য রাজা টোডরমলকে অর্পণ করেছিলেন। তাদের নির্দেশনায় আকবরের রাজজ্যোতিষী ফতে উল্লাহ সিরাজী যে সমন্বিত প্রস্তাব প্রণয়ন করেন, তার ভিত্তিতে ফসলি সন নামে নতুন বর্ষ গণনার রীতি প্রবর্তিত হয় ৫৯৪ হিজরি সনের জুলিয়ান ক্যালেন্ডার মোতাবেক ১৪ এপ্রিল সোমবার।
প্রবর্তনের খ্রিস্টীয় সন ১৫৮৪ হলেও ফসলি সনের প্রবর্তক সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহণের সন ১৫৫৬ থেকেই এর ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা প্রদান করা হয় শুভ ১লা বৈশাখ। প্রজাদের উৎপাদিত ফসলের উপর কর বা রাজস্ব আরোপ এবং তা যথাসময়ে যথামৌসুমে সংগ্রহের সুবিধার্থেই মূলত ফসলি সনের প্রবর্তন করা হয়।
১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর ভারতের শাসনক্ষমতা কোম্পানির হাত থেকে পহেলা বৈশাখের ইতিহাস ব্রিটিশ সরকারের হাতে চলে যায়। ওয়েস্ট মিনিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত ভারতে ব্রিটিশ সরকারের প্রথম বাজেট আনুষ্ঠানিকভাবে আইনসভায় পেশ করা হয় ৭ এপ্রিল ১৮৬০ সালে।
অর্থবছরের ধারণাটি বাংলা সন অনুযায়ী শুভ ১লা বৈশাখ রাখার পক্ষপাতি ছিলেন ভারতবর্ষের প্রথম অর্থমন্ত্রী জেমস উইলসন (১৮০৫ - ১৮৬০)।স্বনামধন্য ইকোনোমিস্ট পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের সচিব, অর্থ সচিব, ব্রিটিশ আইনসভার প্রভাবশালী সদস্য, ফ্রি ট্রেড আন্দোলন কর্মী,পহেলা বৈশাখের গুরুত্ব পেপার কারেন্সি প্রবর্তনের প্রবক্তা ছিলেন জেমস উইলসন।
শুভ ১লা বৈশাখ ভারতে ভাইসরয়দের কাউন্সিলে অর্থ-সদস্য (মন্ত্রী সমতুল্য) হিসেবে নিযুক্তি পেয়ে কলকাতায় যোগদান করেন ১৮৫৯ সালের ২৯ নভেম্বর। ইতিহাস সচেতন বিচক্ষণ অর্থনীতিবিদ উইলসন ভারতের আর্থ-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে ৭ এপ্রিল ১৮৬০ উপস্থাপিত ভারত সরকারের প্রথম বাজেট বক্তৃতাতেই ভারতে আধুনিক আয়কর পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রস্তাব করেন।
প্রাচীন ভারতের মনুসংহিতা থেকে রাজস্ব আদায়ের সূত্র উল্লেখ করলেও তিনি মূলত ব্রিটেনের আয়কর আইনের কাঠামোয় এদেশে আয়কর আরোপের রূপরেখা দেন। শুভ ১লা বৈশাখ এপ্রিল মাস থেকে তার দেওয়া বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হয়ে যায় শুভ ১লা বৈশাখ যার সাথে সম্রাট আকবরের প্রবর্তিত বাংলা সনের যৌক্তিক সাদৃশ্য উল্লেখযোগ্য।
সর্বশেষ কথাঃ পহেলা বৈশাখ ও বাঙালির সংস্কৃতি
শুভ ১লা বৈশাখ, পহেলা বৈশাখ ও বাঙালির সংস্কৃতি পহেলা বৈশাখের গুরুত্ব ও পহেলা বৈশাখ নিয়ে যে উৎসবের আয়োজন তা বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি। এ দিনটি বাংলা বছরের প্রথম দিন। এ পহেলা বৈশাখ ধর্ম-বর্ণ সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সকল বাঙালি স¤প্রদায়ের সম্প্রীতির মিলনমেলার অপর নাম বাংলা নববর্ষ উৎসব। এটি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে শুভ ১লা বৈশাখ সার্বজনীন উৎসব ও সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব
আরো পোস্ট দেখুন