আয়াতুল কুরসি আরবিঃ.
আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণঃAyatul Kursi Bangla
আল্লাহু লা— ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্কাইয়্যুম,
লা- তা’খুজুহু সিনাত্যু ওয়ালা নাউম।
লাহু মা ফিসসামা ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্।
মান যাল্লাযী ইয়াশ ফাউ ইনদাহু— ইল্লা বি ইজনিহ,
ইয়া লামু মা বাইনা- আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম,
ওয়ালা ইউ হিতুনা বিশাই ইম্ মিন ইল্ মিহি— ইল্লা বিমা শা’—-আ,
ওয়াসিয়া কুরসি ইউহুস সামা ওয়াতি ওয়াল আরদ,
ওয়ালা ইয়া উদুহু হিফজুহুমা
ওয়াহুয়াল আলিয়্যূল আযী-ম।
যে কথাটা না বললেই নয়, বাংলা ভাষা দিয়ে ১০০% শুদ্ধ আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করা সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের পরামর্শ থাকবে আপনি অত্যন্ত সহজ ভাষা “আরবি” অতি সিগ্রই শিখে ফেলুন। কারন কোরআনের মদ্ধেই আল্লাহ সকল নেয়ামত রেখেছে, আমাদের এই নেয়ামত ভোগ করতে হলে অবশ্যই নিয়মিত কোরআন পাঠ করতে হবে।
আয়াতুল কুরসি বাংলা অর্থঃ
আল্লাহ,তিনি ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক।
তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়।
আকাশ ও ভূমিতে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর।
কে আছে এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তার অনুমতি ছাড়া?
দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন।
তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু তা ব্যতীত – যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন।
তাঁর আসন সমস্ত আকাশ ও পৃথিবীকে পরিবেষ্টিত করে আছে।
আর সেগুলোকে ধারণ করা তার পক্ষে কঠিন নয়।
তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান
আয়াতুল কুরসির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা ও এই আয়াতে আল্লাহের গুন।
প্রথমেই বলা হয়েছে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ, উপাস্য বা ইবাদাতের যোগ্য কেউ নেই। এরপর আল্লাহর গুণাবলি বর্ণনা হয়েছে। اَلْـحَيُّ এই শব্দের মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, তিনি সর্বদা জীবিত, তিনি অমর। قَيُّوْمُ এই শব্দের অর্থ হচ্ছে, তিনি নিজে বিদ্যমান থেকে অন্যকেও বিদ্যমান রাখেন এবং এই মহাবিশ্বের সব কিছু তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন।
তারপর বলা হয়েছে, তাকে তন্দ্রা (ঘুমের প্রাথমিক প্রভাব বা ক্লান্তি) ও নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না। অর্থাৎ মহাবিশ্বের সকল বিষয়ের নিয়ন্ত্রণ তাকে ক্লান্ত করে না। অতএব তিনি সর্বক্ষণ আসমান জমিনের সব কিছু তদারকি করেন, তাকে ফাঁকি দেওয়ার মত কোন সুযোগ নেই।
পরের অংশ থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ আকাশ এবং জমিনের সবকিছুর মালিক এবং তিনি যা কিছু করেন, তাতে কারো আপত্তি করার অধিকার বা কোন সুযোগ নেই।
তার অনুমতি ছাড়া তার কাছে সুপারিশ করার ক্ষমতাও আসমান জমিনের কারো নেই। আসমান জমিনের সব কিছুই একমাত্র আল্লাহের প্রশংসা করে।
আল্লাহ অগ্র-পশ্চাৎ যাবতীয় অবস্থা ও ঘটনা সম্পর্কে অবগত আছেন। অগ্র-পশ্চাৎ বলতে এ অর্থ হতে পারে যে, তাদের জন্মের পূর্বের ও জন্মের পরের যাবতীয় অবস্থা ও ঘটনাবলি আল্লাহ জানেন। আবার এ অর্থও হতে পারে যে, অগ্র বলতে মানুষের কাছে প্রকাশ্য, আর পশ্চাত বলতে বোঝানো হয়েছে যা মানুষের কাছে অপ্রকাশ্য বা গোপন। আল্লাহ সব কিছুই জানেন, তিনি অন্তরজামি।
আল্লাহ যাকে যে পরিমাণ জ্ঞান দান করেন সে শুধু ততটুকুই পায়। আমরা অনেক কিছুতেই বারাবারি করে ফেলি অনেক সময়, যেমন বলে থাকি আল্লাহ সবাইকেই সমান জ্ঞান দিয়েছে কেউ চর্চা করে না তাই তার জ্ঞান কম। এই আয়াত থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ যে আল্লাহ সবাইকে সমান ভাবে জ্ঞান দান করেন নি।
যাকে যে পরিমাণ করেছে সে ততটুকুই পায়। এটা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করার কোন সুযোগ নেই, কারন সবার জ্ঞানের পরিধি যদি এক রকম হত তাহলে বিশ্বের সকল মানুষ এক চিন্তার অধিকারী হত এবং বিশ্বে এক জিনিস ছাড়া অন্য কোন কিছু আবিস্কার হতো না।
পরের অংশে বলা হয়েছে তার আরশ ও কুরসি এত বড় যে, তা সমগ্র আকাশ ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে রেখেছে। এ দুটি বৃহৎ সৃষ্টি এবং আসমান ও জমিনের রক্ষণাবেক্ষণ করা তার জন্য অত্যন্ত সহজ। অতএব এথেকে বুঝা যায় আসমান জমিনের সকল কিছুই আল্লাহ রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকেন। আল্লাহ কোন কিছু রক্ষা না করলে আমরা হাজার চেষ্টা করেউ সেটা রক্ষা করতে পারবো না।
শেষ অংশে আল্লাহকে “সুউচ্চ সুমহান” বলা হয়েছে। তার সমতুল্য বা সমকক্ষ কেও নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়, তার কোন শরীক নেই।